
দুর্গাপুরবাসীর জন্য আজকের সকালটা যেন এক অজানা দুর্ভোগের বার্তা নিয়ে এল। সকাল ৮টা নাগাদ হঠাৎ করে শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ চলে যায়। দীর্ঘক্ষণ ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ডিভিসি (DVC)-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্গাপুর সাবস্টেশনে একটি বড় ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
কোন কোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন?
বেশি প্রভাব পড়েছে দুর্গাপুরের চিত্তরঞ্জন রোড, বেনাচিতি, স্টেশন বাজার, সাগরভাঙা, অচিন্ত্যনগর এবং বিবেকানন্দ রোড এলাকায়। ওইসব জায়গার স্থানীয়রা জানান, সকাল সকাল কাজ শুরু করার আগে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় সব কার্যক্রম থমকে গিয়েছে।
স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি করতে অসুবিধা, অফিস যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক যন্ত্র চালানো বন্ধ — এসব মিলিয়ে মানুষ কার্যত দিশেহারা।
কী বলছে DVC?
ডিভিসি-র দিক থেকে জানানো হয়েছে,
“দুর্ভাগ্যবশত, আজ সকালে দুর্গাপুর সাবস্টেশনে একটি ব্রেকার ইউনিটে ফাটল দেখা দেয়। তার ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম এখন কাজ করছে এবং দ্রুত পুনঃসংযোগের চেষ্টা চলছে।”
যদিও বেলা ৯টা নাগাদ কিছু কিছু এলাকায় আংশিকভাবে বিদ্যুৎ ফিরিয়ে দেওয়া গেছে, তবে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
দুর্গাপুরবাসীরা কী বলছে?
স্থানীয় বাসিন্দা সোমা দত্ত বলেন,
“আমার ছেলেকে আজ স্কুলে যেতে দেরি হয়ে গেল। জল গরম করতে পারিনি, ইলেকট্রিক স্টোভ চলছিল না। রোজকার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।”
ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষ জানালেন,
“দোকানে ফ্রিজ চলে না, সিসিটিভি অফ — ক্রেতা নেই বললেই চলে। একটার পর একটা নানারকম সমস্যা। প্রশাসনের কোনো জবাব নেই।”
প্রশাসনের ভূমিকা
স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিরা জানান, DVC-র সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন, বারবার একই এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট কেন দেখা দিচ্ছে? কেন পুরসভার পক্ষ থেকে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?
আজকের বিদ্যুৎ সমস্যা দুর্গাপুরবাসীর জীবনে আরও একবার পরিষেবা ব্যবস্থার দুর্বল দিক তুলে ধরল। আধুনিক শহর হয়েও প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের মতো প্রধান সমস্যায় জর্জরিত শহরবাসী। প্রশাসনের তরফ থেকে যদিও দ্রুত মেরামতির প্রতিশ্রুতি মিলেছে, কিন্তু দুর্গাপুরের জনগণ চাইছে স্থায়ী সমাধান।
“বারবার নয়, একবারেই স্থায়ী সমাধান চাই,” — বলছেন দুর্গাপুরবাসী।