
বৈশ্বিক অর্থনীতির উত্তাল স্রোতে ভারতীয় রূপির পথে ঝাঁপানি। আজ সকালেই রূপির বিনিময় হার পড়ে ৮৫.৭২ প্রতি ডলারে, যা ০.৪%–এর মতো দুর্বলতা প্রকাশ করে । প্রধান কারণ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র–ভারতসহ ব্রিকস-এর দেশগুলোর উপর অতিরিক্ত ১০% ট্যারিফ আরোপের হুমকি।
কেন ঝাঁকুনি এলো?
- ট্রাম্পের ট্যারিফ হুমকি:
ট্রাম্প গতকাল ঘোষণা করেন, যদি আগস্টের ১ তারিখের আগে ট্রেড ডিল না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র ১০% বাড়তি ট্যারিফ আরোপ করবে — BRICS-সহ বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে ft.com। যেহেতু ভারত BRICS-এর প্রতিষ্ঠাতা, ভারতের মুদ্রা বাজার সরাসরি প্রভাবিত হচ্ছে। - এশিয়ার বিনিময় বাজার:
এশিয়ার অন্যান্য মুদ্রার মতো রূপিও দুর্বল হয়ে পড়েছে, কারণ ডলার ঘিরে ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হয়েছে । - রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লেনদেন:
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) একদিকে মুদ্রাস্ফীতি ও রিসার্ভ বজায় রাখতে ফরোয়ার্ড বুক কমানো চালিয়ে যাচ্ছে, যে প্রক্রিয়ার ফলে মুদ্রা পুরোপুরি স্থির রাখা সম্ভব হচ্ছে না ।
বাজারের প্রভাব
- ফরেক্স বিশ্লেষকদের তাৎক্ষণিক প্রত্যাশা:
রূপি শীঘ্রই ৮৬–৮৬.২০ লেভেল স্পর্শ করতে পারে, এবং সপ্তাহের প্রথম দিকে ৮৫.৪৮–৮৫.৫২ সীমায় আটকে থাকতে পারে । - ইকুইটি ও বাজারের প্রতিক্রিয়া:
আজ BSE Sensex ও Nifty 50-এ গড়ে ০.১% পতন দেখা গেছে business-standard.com+3reuters.com+3ndtv.com+3। এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও ধসের রেকর্ড রয়েছে । - তেলের বাজার:
OPEC+ প্রথম থেকে জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি করায় ব্রেন্ট মূল্য $৬৭.৮ থেকে $৬৮.০১/ব্যাল পর্যন্ত ওঠা–নামা করেছে । যার ফলে আমদানি কমে গেলে রূপির ওপর চাপ বাড়তে পারে।
RBI এবং তার প্রস্তুতি
- বৃহত্তর রিজার্ভ, $৬২৪ থেকে $৭০০ বিলিয়ন পর্যন্ত বাড়িয়েছে — যা রূপির পতনে রোধী বল হিসেবে কাজ করবে telegraphindia.com+13reuters.com+13ndtv.com+13।
- ফরোয়ার্ড বুক হ্রাস ও স্পট মার্কেটে ক্রয় চালু রেখেছে — রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীন নীতিমালার প্রমাণ ।
- তবে, বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতে, রূপির উপর বাজারের মনোভাব এখনও নেতিবাচক, এবং চালু ট্যারিফ বা টাকার ব্যাপারে নতুন অবস্থান রূপির ওপর ধরে রাখার ব্যাপারে সহায়ক হবে না ।
সংক্ষেপে:
- রূপি আজ প্রায় ৮৫.৭২-এ পৌঁছেছে — যা ২০২৫ সালের এক নিকটতম পর্যায়।
- ট্রাম্পের ট্যারিফ হুমকি, বৃহৎ স্টকআউট ফ্লো, বাজারের উদ্বেগ—এই তিনটি একত্রিত কারণ রূপির দুর্বলদের জন্য মূল চাবিকাঠি।
- RBI বিশ্বাসযোগ্যতা ও মূদ্রা নীতি–এর ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, বিশেষ করে নির্দিষ্ট ফরোয়ার্ড এরিয়ায় রূপি আটকে রাখতে।
ট্রাম্পের ট্যারিফ হুমকি এবং দুনিয়ার অন্যান্য খেলোয়াড়দের মতো বাজারের আবহাওয়ায় রূপি মানে শুধুমাত্র সংখ্যার পতন নয়, এটি একটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকেত—যা প্রতিটি বাড়তি ডলার বিনিময় হারকে দেশীয় বাজারে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশি আমদানিকারক, পর্যটন সেবা গ্রাহক, ঋণগ্রহীতা—সবাইকে রূপির পতনের বিষয়টি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।